আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবের মক্কায় পবিত্র কাবা শরীফের ওপর বিরল এক মহাজাগতিক দৃশ্য দেখা গেছে।
প্রাচীনকাল থেকেই সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্রের অবস্থান দেখে নামাজের সময় নির্ধারণ, রোজার শুরু ও শেষ এবং কিবলার সঠিক দিক নির্ধারণ করা হতো।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোরে কাবার ঠিক ওপরে ক্ষীয়মাণ গিব্বাস চাঁদ অবস্থান করলে তা চোখের সামনে ধরা দেয় হাজার হাজার মুসল্লি ও স্থানীয়দের। সৌদি সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া এ নিয়ে ছবিও প্রকাশ করেছে।
এই দৃশ্যকে বিজ্ঞানীরা অভিহিত করেছেন এক অসাধারণ মহাজাগতিক ঘটনারূপে। সৌদি জেদ্দা অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির প্রধান মাজেদ আবু জাহরা বলেন,
এটি নিছক কাকতালীয় নয়, বরং মহাজাগতিক গতিপথ নির্ণয়ের নিখুঁত গণনারই এক বাস্তব প্রমাণ। তার মতে, এ ধরনের দৃশ্য মুসলিম বিশ্বের জন্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। কারণ চাঁদসহ অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর গতিপথ পর্যবেক্ষণ নামাজের দিক তথা কিবলা নির্ধারণে আরও স্পষ্টতা আনে। ‘
আবু জাহরা আরও জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদ সপ্তর্ষিমণ্ডল বা জনপ্রিয় সেভেন সিস্টার্স নক্ষত্রপুঞ্জের সামনে দিয়ে যাবে। তখন একে একে কিছু নক্ষত্রকে কিছু সময়ের জন্য ঢেকে দেবে চাঁদ। এই অসাধারণ দৃশ্য সৌদি আরবসহ সমগ্র আরব বিশ্ব থেকে দৃশ্যমান হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পবিত্র কাবা শরীফে উপস্থিত হাজার হাজার মুসল্লির জন্য এ দৃশ্য ছিল এক অনন্য ও স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। অনেকের কাছে এটি আধ্যাত্মিকভাবে গভীর তাৎপর্যের হলেও, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে এটি ছিল এক ধরনের ব্যবহারিক পরীক্ষা। তাঁরা গাণিতিক মডেলের ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে সরাসরি পর্যবেক্ষণের তুলনা করেছেন এবং বিভিন্ন কোণ ও উচ্চতা বিশ্লেষণ করে তাদের গণনার যথার্থতা যাচাই করার সুযোগ পেয়েছেন।
ইসলামের ইতিহাসে জ্যোতির্বিদ্যা সবসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রাচীনকাল থেকেই সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্রের অবস্থান দেখে নামাজের সময় নির্ধারণ, রোজার শুরু ও শেষ এবং কিবলার সঠিক দিক নির্ধারণ করা হতো। আজও এই ধরনের মহাজাগতিক ঘটনা শুধু বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য নয়, বরং মুসলিমদের কাছে আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণারও উৎস।
মক্কার আকাশে কাবা শরীফের ওপর চাঁদের এ মহিমান্বিত অবস্থান তাই একসাথে আধ্যাত্মিক ও বৈজ্ঞানিক তাৎপর্য বহন করে, যা বিশ্ব মুসলিমদের অন্তরে গভীর ছাপ রেখে গেছে। সূত্র: আনাদোলু